প্রিন্ট এর তারিখঃ ২০ মে, ২০২৪ ১০:২১ পূর্বাহ্ন || প্রকাশের তারিখঃ ২১ জানুয়ারী, ২০২৪

পদ্মার চর জুড়ে সরিষা ফুলের সমারোহ,কৃষকের চোখে স্বপ্ন

কামারগাঁও সংলগ্ন পদ্মার চর জুড়ে এখন শুধুই হলুদের সমারোহ

শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি: মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকুল এলাকার কামারগাঁও সংলগ্ন পদ্মার চর জুড়ে এখন শুধুই হলুদের সমারোহ। এই চরটিতে এখন ব্যাপক সরিষা চাষাবাদ হচ্ছে। চরের বির্স্তীণ ভূমিতে সরিষার পাশাপাশি পেয়াজ, ভুট্রা, কালজিরা, বাদাম, ধানসহ অন্যান্য রবি শস্যের চাষ করছেন চরের বাসিন্দারা। তবে সরিষা ক্ষেতির আদলে পুরো চর জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে হলুদের এক রাজ্যপুরিতে। মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগরের ভাগ্যকুল মৌজায় অবস্থিত পদ্মার চরটি যেন হলুদের চাদরে ঢাকা পড়েছে। শীতের কুয়াচ্ছন্ন বিকালে হলুদের দৃষ্টিনন্দন সরিষা ফুলের মেলা উপভোগ করতে মানুষ কিছুটা সময় কাটাটে চরটিতে আসছেন। স্থানীয়রা জানায়, সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহ করতে এ বছর পদ্মার চরে মৌয়াল আসতে দেখছেন তারা। এরই মধ্যে একটি মধু সংগ্রহকারী একটি কোম্পানীর লোকজন মৌ-বাক্স নিয়ে চরের জমি নির্ধারণ করে গেছেন। চরে সরিষার বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন তারা। অপর একটি সূত্র জানায়, আড়িয়ল বিল এলাকার শ্রীনগর উপজেলা অংশে বাড়ৈখালীর মদনখালীতে দেশের নামকরা মতি মধু উৎপাদণকারীর একটি দল সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহে মাঠে কাজ করছেন। এখানে খাটি মধু সংগ্রহের জন্য ১০৫টি মৌবক্স পাতা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় কৃষি অফিস তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদণ বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় পরীক্ষামূলক ১৫টি আধুনিক মৌবক্স প্রদান করেছে। এর আগে উপজেলা কৃষি অফিসার মোহসিনা জাহান তোরণ সাংবাদিকদের জানান, উপজেলায় প্রায় ৫৭০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আগাম সরিষা চাষ করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় ১০৫ হেক্টর বেশী। এবার সরিষার প্রণোদণা কর্মসূচির আওতায় ১ হাজার ৬০০ কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। পদ্মার চর ঘুরে দেখা যায়, সরিষা ফুলের ভরা মৌসুম চলছে। জমিতে মৌ-মাছির দল মধু আহরণে ছোটাছোটি করছে। হিমেল বাতাসে ভেসে আসছে মৌ-মৌ ঘ্রান। গ্রাম্য এই পরিবেশে সরিষা ফুলের দৃষ্টিনন্দন অপরূপ সৌন্দর্য উভোগের জন্য দর্শনার্থীরা আসছেন। জিলু রহমান খান, জুয়েল মাদবর, রফিক খানসহ চরের সরিষা চাষীরা জানান, পদ্মার চরে বারি-১৭ জাতের সরিষার আবাদ বেশী হয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে পদ্মার চরেই হাজার বিঘা জমিতে নানান জাতের সরিষার আবাদ হচ্ছে। মো. কাউসার নামে এক কৃষক বলেন, ২০ বিঘা সরিষা চাষ করেছি। প্রতি বিঘা সরিষা চাষে ব্যয় ধরা হচ্ছে ১০ হাজার টাকা। বিঘায় সরিষা উৎপাদণ ধরা হচ্ছে ৪-৫ মণ করে। তবে বারি-১৮ জাতের সরিষা চাষে প্রতি বিঘায় ৭ মণ সরিষা উৎপাদণের লক্ষ্যমাত্র ধরছেন। তিনি বলেন, আজ ৩ জন মৌয়াল চরে এসেছিলেন। তারা সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহের জন্য আসতে চাচ্ছেন। আমি তাদের সার্বিক সহযোগিতার করার আশ্বাস দেই। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আমার একটি জমি নির্ধারণ করে গেছেন। খুব শীঘ্রই তারা মৌবক্স নিয়ে আসবেন বলে জানিয়ে গেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পদ্মার চরে রাই/চৈতা জাতের সরিষার পাশাপাশি মাঘি জাতের সরিষার চাষ বেশী করা হচ্ছে। দেশী জাতের রাই সরিষার উৎপাদণ কম হলেও মান ভালো হওয়ায় এর বাজার মূল্য কিছুটা বেশী।

প্রিন্ট নিউজ