প্রিন্ট এর তারিখঃ ২৯ মার্চ, ২০২৪ ০০:২৭ পূর্বাহ্ন || প্রকাশের তারিখঃ ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১

শ্রীনগরে সন্তানের স্বীকৃতি চায় ৮ম শ্রেণির ছাত্রী

শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি: শ্রীনগর উপজেলার তন্তর ইউনিয়নের পানিয়া গ্রামে ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রী তার সন্তানের স্বীকৃতি চেয়ে কোন প্রতিকার পাচ্ছেনা। গত সোমবার পার্শ্ববর্তী সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওই কিশোরী একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেয়। পানিয়া গ্রামের মো. সেলিম মল্লিকের পুত্র মাহিম মল্লিক (১৮) ভুমিষ্ট সন্তানের জন্মদাতা বলে দাবী করেন ওই কিশোরী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাহিম মল্লিক সুকৌশলে মোবাইলে ওই কিশোরীর গোসল ও জামা কাপড় পালটানোর ভিডিও চিত্র ধারন করে তাকে ব্লাকমেল করে একাধিক বার ধর্ষণ করে। এক পর্যায় ওই কিশোরী সন্তান সম্ভবা হয়ে পড়লে মাহিমের পরিবারের চাপে ঘরোয়াভাবে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে প্রথমে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়। ওই কিশোরী এতে রাজি না থাকায় গর্ভপাত করানো সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ ৯ মাসের মাথায় গত ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ খ্রী: সোমবার দুপুরে দিকে সিরাজদিখানের (ইছাপুরা) স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কিশোরী সন্তান প্রসব করে। ঘটনাটি এলাকা ছড়িয়ে পরলে মাহিমের পরিবার এ বিষয়ে মুখ না খুলতে কিশোরীর পরিবারটিকে চাপ সৃষ্টি করে আসছে বলে জানা গেছে। এতে করে ভূক্তভোগী ও তার মা আত্মগোপন করেন। অভিযুক্ত মাহিমের পানিয়ার বাড়িতে গিয়েও পরিবারের কারও দেখা মিলেনি। 

ভূক্তভোগীর ফুপা মো. ধলু মিয়া বলেন, কিশোরীর বড় বোন বুধবার দুপুরে আমাকে ফোন করে আপোষ মিমাংসা করার কথা বলেছে। তিনি জানান, কিশোরীর মায়ের ভুলে এমনটা হয়েছে। তাদেরকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বলেছিলাম। এতে তারা রাজি হননি। ভূক্তভোগী ও তার সন্তানের স্বীকৃতি এবং অপরাধির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, ভূক্তভোগীর পিতা জীবিত না থাকায় পরিবারটি অসহায়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাহেব আমাকে ফোন করে সদ্য জন্ম নেয়া পুত্র সন্তানটির যাতে কিছু না হয় সে বিষয়ে আমাকে খেয়াল রাখতে বলেন। হাসপাতালে গিয়ে আমি ভূক্তভোগী ও তার মা এবং বড় বোনকে বলেছি এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিতে। কিন্তু তারা নিজ থেকে এখনো বিষয়টি পুলিশকে জানায়নি।

তন্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ওই কিশোরীর মা আমাকে ঘটনার বিস্তারিত জানায়। আমি তাদেরকে আইনের সহায়তা নিতে বলার পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবগত করি। 

সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও মো. তাইফুল হক এ বিষয়ে জানান, সন্তান প্রসব করানোর জন্য রোগীর স্বজনরা বাড়িতে চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে এখানে নিয়ে আসে। মূমুর্ষু অবস্থা প্রসূতিকে মূমুর্ষু অবস্থা দেখে মানবিক কারণে ওই কিশোরীর স্বাভাবিক ডেলিভারী করানো হয়। পুত্র সন্তান জন্মের পরে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিলে শিশুটিকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। রেজিস্ট্রারে প্রসূতির স্বামীর নাম না লিখায় সিরাজদিখান থানা ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে অবগত করি।

শ্রীনগর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা গুল রাওশান ফিরদৌস জানান, স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে আমি বিষয়টি জানতে পারি। এ ঘটনায় কাউন্সিলিংয়ের কোন সুযোগ না থাকায় আমি আইনী সহায়তা নিতে বলেছি।

এ ব্যাপারে শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হেদায়াতুল ইসলাম ভূঞা জানান, এই ঘটনায় এখনো থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করতে আসেনি।

প্রিন্ট নিউজ