প্রিন্ট এর তারিখঃ ২৯ এপ্রিল, ২০২৪ ১৩:১৮ অপরাহ্ন || প্রকাশের তারিখঃ ২৩ জানুয়ারী, ২০২১

আজকে আমার অত্যন্ত আনন্দের দিন গৃহহীন পরিবারকে গৃহ দিতে পারছিঃ প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ডেস্ক রিপোর্টঃ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ঘোষিত মুজিববর্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও ঘর প্রদান করতে পারা নিজের সবচেয়ে বড় আনন্দের দিন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  তিনি বলেন, এটাই মুজিববর্ষের সব থেকে বড় উৎসব। সবার মানসম্মত জীবন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এতে জাতির পতিা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মা শান্তি পাবে।  শনিবার (২৩ জানুয়ারি) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও ঘর প্রদান কর্মসূচির উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। এদিন দেশের ৪৯২ উপজেলার প্রায় ৭০ হাজার পরিবারকে পাকাঘর হস্তান্তর করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আমার অত্যন্ত আনন্দের দিন। গৃহহীন পরিবারকে গৃহ দিতে পারছি, এটি আমার সবচেয়ে আনন্দের। আমার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানুষের কথাই ভাবতেন। আমাদের পরিবারের লোকদের চেয়ে তিনি গরীব অসহায় মানুষদের নিয়ে বেশি ভাবতেন এবং কাজ করেছেন। এই গৃহ প্রদান কার্যক্রম তারই শুরু করা। এ সময় লাইভে সংযুক্ত ছিল- খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা, চাপাইনবাবগঞ্জ সদর, নীলফামারীর সৈয়দপুর ও হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলা প্রশাসন। পাশাপাশি, দেশের সব উপজেলাই অনলাইনে এ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়েছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে মুজিববর্ষ ঘোষণা করে সরকার। মুজিববর্ষে কেউ গৃহহীন থাকবে না- এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে আশ্রায়ন-২ প্রকল্পের অধীনে চলমান কর্মসূচির প্রথম পর্যায়ে সারাদেশে ঘর পেলো ৬৯ হাজার ৯০৪ ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার। দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীনদের ঘর করে দিতে এখন পর্যন্ত প্রায় নয় লাখ পরিবারকে তালিকাভূক্ত করেছে শেখ হাসিনা সরকার।

৬৯ হাজার ৯০৪ পরিবারের মধ্যে ৬৬ হাজার ১৮৯টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে দুই শতাংশ খাস জমির মালিকানা দিয়ে বিনা পয়সায় দুই কক্ষবিশিষ্ট ঘর মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে ব্যারাকের মাধ্যমে ২১টি জেলার ৩৬টি উপজেলায় ৪৪ প্রকল্পের মাধ্যমে তিন হাজার ৭১৫টি পরিবারকে ব্যারাকে পুনর্বাসন করা হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এটিই বিশ্বে গৃহহীন মানুষকে বিনামূল্যে ঘর করে দেওয়ার সবচেয়ে বড় কর্মসূচি। এর মধ্য দিয়ে পৃথিবীতে নতুন ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশ।

দেশে ভূমিহীন ও গৃহহীন অসহায় মানুষদের মধ্যে যাদের ভূমি নেই তাদের সরকারের খাস জমি থেকে দুই শতাংশ ভিটে এবং ঘর দিচ্ছে সরকার। যাদের ভিটে আছে ঘর নেই তাদের ঘর দিচ্ছে সরকার। প্রতিটি ঘর দুই কক্ষ বিশিষ্ট। এতে দুটি রুম ছাড়াও সামনে একটি বারান্দা, একটি টয়লেট, একটি রান্নাঘর এবং একটি খোলা জায়গা থাকবে। পুরো ঘরটি নির্মাণের জন্য খরচ হবে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা এবং মালামাল পরিবহনের জন্য চার হাজার টাকা দেওয়া হবে প্রতি পরিবারকে।

এ বিষয়ে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প পরিচালক মো. মাহবুব হোসেন বলেন, 'সারা দুনিয়াতে এটি প্রথম ঘটনা এবং একমাত্র ঘটনা একসঙ্গে বিনে পয়সায় এত ঘর করে দেওয়া। মাদার অব হিউম্যানিটি সারা দুনিয়াতে একটি নজির স্থাপন করলেন।' ২৩ জানুয়ারি প্রায় ৭০ হাজার পরিবারকে ঘর দেওয়ার পর থেকে আগামী এক মাসের মধ্যে আরও এক লাখ ঘর নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে বলেও জানান মাহবুব হোসনে।

সারা বাংলাদেশে ঘরও নেই, জমিও নেই এমন পরিবারের সংখ্যা দুই লাখ ৯৩ হাজার ৩৬১। ভিটেমাটি আছে, ঘর জরাজীর্ণ কিংবা ঘর নেই এমন পরিবারের সংখ্যা পাঁচ লাখ ৯২ হাজার ২৬১। মুজিববর্ষ উপলক্ষে সারা বাংলাদেশে যে তালিকা করা হয়েছে সব মিলিয়ে সেই তালিকায় আট লাখ ৮৫ হাজার ৬২২টি পরিবার রয়েছে।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের নথি থেকে জানা যায়, ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তত্ত্বাবধানে আশ্রয়ণ নামে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। এ প্রকল্পের আওতায় ১৯৯৭ সাল থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাস অবধি তিন লাখ ২০ হাজার ৫২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো- ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্ন অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন, ঋণপ্রদান ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহে সক্ষম করে তোলা এবং আয় বাড়ে এমন কার্যক্রম সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ।

 

 

/ভো

প্রিন্ট নিউজ