প্রিন্ট এর তারিখঃ ০৫ মে, ২০২৪ ১৬:০৭ অপরাহ্ন || প্রকাশের তারিখঃ ০১ অক্টোবর, ২০১৯

পুলিশ কর্মকর্তার পিস্তল দিয়ে ছেলের ‘আত্মহত্যা’

‘মা তোমার যোগ্য সন্তান হতে পারিনি, বাবা তোমার যোগ্য সন্তান হতে পারিনি। ভালো শিক্ষার্থী হতে পারিনি। আমার মৃত্যুর জন্য আমিই দায়ি। ’’

মারা যাওয়ার আগে একটি চিরকুটে এভাবেই তার মনের কিছু কথা লিখে গেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপ-কমিশনার সাজ্জাদুর রহমানের ছেলে সাদিক বিন সাজ্জাত (১৮)। ’

আজ সোমবার সকালে আজিমপুরে সরকারি কোয়ার্টারের ৬৭ নম্বর ভবন থেকে সাদিকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করার সময় এই চিরকুট উদ্ধার করে লালবাগ থানা পুলিশ। ’

প্রাথমিক তদন্ত শেষে ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোনতাসিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে প্রাথমিক তদন্ত শেষে। তবে তার (সাদিক) মৃত্যুর পেছনে অন্য কোন কারণ আছে কি না তার তদন্ত চলছে। ’

প্রাথমিক তদন্ত শেষে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, সাদিক চিরকুটে যে তথ্য লিখে গেছে তা থেকে মনে হয়েছে, সে লেখাপড়ায় ভালো করতে পারছিল না এ কারণে আত্মহত্যা করেছে। তবে সাদিক কম্পিউটারে নানান ধরনের গেমে আসক্ত ছিল।’

তার মধ্যে (এইড) নামে একটি গেমের সঙ্গে তার বেশি আসক্তি ছিল। তার কক্ষ থেকে ‘ইভেন ইন ডেথ, আই উইল বি হিরো’ লেখা কিছু তথ্যও পাওয়া গেছে। এতে মনে হতে পারে গেইমের কারনেও সে আত্মহত্যা করতে পারে। এছাড়া কলেজে সে কারো প্রেমে পড়েছিল কি না, কারো সঙ্গে বিরোধ ছিল কিনা, কিংবা অন্য কারনে কারণে সে আত্মহত্যা করেছে কিনা তার তদন্ত চলছে।’

গভীর রাতে পরিবারের সবাই যখন ঘুমিয়ে যায় তখন সাদিক আত্মহত্যা করেন। কিন্তু গুলির শব্দও পায়নি বাবা-মাসহ পরিবারের কেউ। সকালে প্রাইভেট টিউটর আসার পর দরজা ভেঙে তার লাশ উদ্ধার হয়। রাত ৩টা থেকে ভোর চারটার মধ্যে সে বাবার লাইসেন্স করা পিস্তল কপালে ঠেকিয়ে আত্মহত্যা করে বলে প্রাথমিক তদন্ত জানতে পেরেছে পুলিশ। ’’

সে তার বাবা সাজ্জাদুর রহমানের অস্ত্র দিয়ে আত্মহত্যা করেছে জানিয়ে লালবাগ থানার ওসি কেএম আশরাফ উদ্দিন বলেন, প্রাথমিক তদন্তে সে (সাদিক) আত্মহত্যা করেছে বলে জানা গেছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। ’

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, রমনা বিভাগের ডিসি সাজ্জাদুর রহমান এর আগে সাতক্ষীরা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) ছিলেন। দুই মাস আগে তিনি বদলি  হয়ে ঢাকায় আসেন।’

তার দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সাদিক ছিল বড়। তবে সাদিক যমজ ছিল। জন্মের পরপরই সাদিকের যমজ ভাই মারা যায়। ’

আজিমপুর কলোনির চারতলা ভবনের চতুর্থ তলার বামপাশের ফ্লাটে পরিবার নিয়ে থাকেন সাজ্জাদুর রহমান। চার কক্ষের ফ্লাটের করিডর (বারান্দা) সংলগ্ন কক্ষটিতে নিহত সাদিকের শোয়ার কক্ষেই তার গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার হয়। ’

প্রিন্ট নিউজ