প্রিন্ট এর তারিখঃ ২৯ মার্চ, ২০২৪ ০০:১৮ পূর্বাহ্ন || প্রকাশের তারিখঃ ০১ অক্টোবর, ২০১৯

ফারাক্কা বাঁধের সব গেট খুলে দিলো ভারত

ফারাক্কা বাঁধের সবগুলো গেট খুলে দিয়েছে ভারত। এতে ফুলে ফেঁপে উঠেছে পদ্মা। এরই মধ্যে রাজশাহী অঞ্চলের নিচে এলাকাগুলো প্লাবিত হওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন মানুষ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলেছেন, ভারত ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি গেট খুলে দিয়েছে। সেই পানি চলে আসছে বাংলাদেশের পদ্মা নদীতে। রাজশাহীতে পদ্মা নদী প্রবাহ বিপদসীমা ১৮ দশমিক ৫০ মিটারের খুব কাছে চলে এসেছে প্রবাহ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাজশাহী নগরীর বড়কুঠি গেজ পাঠক এনামুল হক বলেন, সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় রাজশাহীতে পদ্মায় প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ১৮ দশমিক শূণ্য এক মিটার। এর আগে সকাল ৬টায় প্রবাহ ছিল ১৭ দশমিক ৯০ মিটার। প্রতি ঘণ্টায় অন্তত ২ সেন্টিমিটার করে প্রবাহ বাড়ছে পদ্মায়।

উজান থেকে নেমে আসা ঢেলে পদ্মায় প্রবাহ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ সহিদুল আলম। তবে ফারাক্কা বাঁধের গেট ‍খুলে দেয়ার বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

সৈয়দ সহিদুল আলম বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মায় প্রবাহ বেড়েছে ১১ সেন্টিমিটার। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় প্রবাহ বেড়েছে ৬ মিটারের মত। ভারতের উত্তর প্রদেশ ও বিহারে বৃষ্টিপাতের কারণে প্রবাহ বাড়তে পারে। তিনি যোগ করেন, আগামী ৩ অক্টোবর রাজশাহীতে পদ্মা বিপদসীমার কাছ দিয়ে প্রবাহিত হবার পূর্বাভাস ছিলো। যেভাবে প্রবাহ বাড়ছে তাতে একদিন আগেই সেটি পৌঁছে যেতে পারে। এটি উজানের ঢলের প্রভাব।

তবে ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, ভারতের উত্তর প্রদেশ ও বিহারে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। এতে উপচে পড়ছে বাঁধের পানি। এ কারণেই ফারাক্কা বাঁধের সবকয়টি গেট একসঙ্গে খুলে দিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। এর জেরে মুর্শিদাবাদ একাংশ ও বাংলাদেশে প্লাবণের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

জানা গেছে, গঙ্গা ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলায় প্রায় সমস্ত নদীতে পানি বাড়ছে। একটানা বর্ষণে ইংরেজ বাজার শহরের একাধিক এলাকা পানির তলায়।

সোমবার ফারাক্কা ব্যারেজের ১০৯টি গেটই খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর জেরে নদীর নিম্নগতিতে প্লাবনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পানি বেড়েছে মালদা জেলার ফুলহর, মহানন্দা ও কালিন্দী নদীতে।

ইংরেজ বাজারের ২৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২১টিই জলমগ্ন। পুরাতন মালদার ২০টি ওয়ার্ডের ৯টি জলমগ্ন। জেলায় একাধিক জায়গায় নদীবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে গঙ্গা ও ফুলহর। এর ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর মিলছে।

এদিকে, রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, গত ১৭ বছরে রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমা (১৮ দশমিক ৫০ মিটার) অতিক্রম করেছে মাত্র দুই বার। এর মধ্যে ২০০৪ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত টানা ৮ বছর রাজশাহীতে পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। ২০০৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে পদ্মার সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল ১৮ দশমিক ৮৫ মিটার। এরপর ২০১৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে পদ্মা বিপদসীমা অতিক্রম করেছিল। ওই বছর পদ্মার উচ্চতা দাঁড়িয়েছিল ১৮ দশমিক ৭০ মিটার।

প্রিন্ট নিউজ