প্রিন্ট এর তারিখঃ ০৪ মে, ২০২৪ ১৬:৪৬ অপরাহ্ন || প্রকাশের তারিখঃ ০৮ আগস্ট, ২০১৯

চান্দের চরে রাস্তার অভাবে থমকে আছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা

 

সিরাজদিখান উপজেলার মূলপটভূমি থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপে পরিণত হয়ে আছে বালুচর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম। উপজেলা থেকে বালুরচর ইউনিয়নের ১ ২ ৩ নং  ওয়ার্ডে যেতে হলে মাঝখানে পেরোতে হয় ধলেশ্বরী নদী। যার কারণে এই গ্রামগুলোর মানুষের কপালে দুর্ভাগ্যই যেনও অদৃষ্টের লিখন। যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে সরকারী সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত এই গ্রামের মানুষগুলোর ভাগ্য অপরিবর্তনশীল। কারন তারা মুন্সীগঞ্জ জেলার আওতাধীন হলেও ওপাশ দিয়ে ঢাকা কেরানীগঞ্জের সাথে একেবারে সংযুক্ত।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় রাজধানী ঢাকা থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার এবং ঢাকা মাওয়া  মহাসড়ক ও কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরের সিরাজদিখান উপজেলা বালুরচর  ইউনিয়নাধীন কতোগুলো গ্রাম। যার মধ্যে চান্দের চর,খাসকান্দি,মদিনা পাড়া, মার্কেট পাড়া,পূর্ব চান্দের চর, ও পশ্চিম চান্দের চর এলাকা। আবদুল্লাহ পুর ও ঢাকায় যাতায়েত করার একমাত্র রাস্তাটির
অবস্থা একেবারেই বেহাল দশা। রাজধানীর এতো কাছে হওয়া সত্তে¡ও রাস্তা ঘাটের অবস্থা দেখলে বুঝা যায় স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৮ বছরেও এই এলাকাগুলোতে সরকারের কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।

মদিনা পাড়ার তমিজ উদ্দিনের ছেলে মোঃ মাসুদ রানা জানান,সিরাজদিখান উপজেলা ও ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষদের এইসব এলাকায় উন্নয়ন নাই বল্লেই চলে,এই এলাকাগুলোর অধিকাংশ মানুষই কৃষিনির্ভর । অত্র অঞ্চলের অধিকাংশ কৃষক উৎপাদিত কৃষিপণ্য সময়মতো বাজারজাত না করতে পারায় প্রতি বছর চরমহারে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয় শুধু মাত্র ভাঙা রাস্তার কারনে।এ ছড়া এই রাস্তা দিয়ে প্রায় শত শত ছাত্রছাত্রী স্কুলে যেতে হয় কষ্টেসৃষ্টে।কাদা খানাখন্দের ভরপুর আর বৃষ্টি হলেই আধাকাচা রাস্তার মাটি ভেঙে নিয়ে যায় সমতল ভ‚মিতে । তখন জন দুর্ভোগ চরম আকার ধারন করে।

জানা যায় বছর খানেক আগে রাস্তাটির জন্য ৩০ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ দেয় স্থানীয় সরকার কিন্ত ঠিকাদার থেকে শুরু করে যারা এই রাস্তার কাজে নিয়োজিত ছিলো তাদের অপরিকল্পিত অব্যবস্থাপনা আর অসাধু মনোভাবের সুবাদে মাত্র অল্প কয়েকমাসের ব্যবধানেই রাস্তাটি পুনরায় জায়গায় জায়গায় ভেঙে ইট মাটি বিলীন হয়ে যেতে দেখা গেছে নিচু জমিতে। সৃষ্টি হয়েছে ভয়ংকর খানাখন্দের।

স্থানীয় জনগন আরো জানান,রাস্তাটিতে ইট বিছানোর সময় সস্তা মাপের ইট আর সরকার অনুমোদিত মাপের বিরুদ্ধে কোনমতে রাস্তাটির কাজ স¤পূর্ণ করেছে ঠিকাদার ও স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামীলীগ নেতা যারা এই কাজের সাথে জড়িত।উল্লেখ্য এই রাস্তায় ইটের সলিউশন করার সময় বিরাট বিরাট গর্ত থাকা স্থানে মাটি ভরাট না করে সে স্থানে সারের বস্তায় মাটি ভরে বস্তার উপর নামমাত্র ইট বিছিয়ে রাস্তার কাজ শেষ করেছে।

চান্দের চর গ্রামের একজন কৃষক জানান.মৌসুমি বিভিন্ন সবজি সহ সবধরনের ফসলেরই চাষবাস হয় এই অঞ্চলে।এসব ফসল এখানকার কৃষকেরা ঢাকার শ্যামবাজার ও কারওয়ান বাজার আড়তে বিক্রি করে।কিন্ত এই রাস্তাটি খারাপ হয়ার কারণে কৃষকেরা ফসল পরিবহন করতে পারছেনা।ঠিক সময় পৌঁছাতে না পারায় ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বরাবরই বঞ্চিত হচ্ছে কৃষকেরা। ছাত্রছাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন,গ্রামের মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে স্থানীয় সরকার রাস্তার জন্য টাকা বরাদ্ধ দিলে কি হবে যারা এই রাস্তা করেছে তারাই হাতিয়ে নিয়েছে সব টাকার অংক এমন কি স্থানীয় এলজিআরডি প্রোকৌশলীরাও ভালোভাবে একদিন পরিদর্শনে আসেননি এবং স্থানীয় চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে রাস্তার অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলেননি।

সিরাজদিখান উপজেলা প্রকৌশলী সোয়াইব বিন আজাদ বলেন,এই এলাকার রাস্তার ব্যাপারে আমি অবগত আছি,শীঘ্রই আমরা ব্যবস্থা নেবো। 

প্রিন্ট নিউজ